Ads

আমরা কিভাবে শিখবো?



বর্তমান একবিংশ শতাব্দে “শিখতে শিখো” ধারনাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেই সাথে স্পটত হওয়া উচিত। কিভাবে শিখতে হয় তা যদি আমরা আয়ত্ত করতে না পারি, তাহলে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়ব। শিক্ষাব্যবস্থা যেমনই হোক না কেন প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলি আয়েত্তে আনা আপনার একান্ত জরুরী ব্যাপার। যদি সঠিকভাবে কিভাবে শিখতে হয় তার পদ্ধতি না জানেন, তাহলে একসময় আপনি থেমে যেতে বাধ্য হবেন। আর আপনি যদি জানেন কিভাবে খুব সহজে কোনো কিছুকে আয়েত্তে আনা যায়, তাহলে আপনাকে কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। আমি সহজভাবে তিনিটি পর্বে তিনটি বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করব

১। শিখতে শিখো
২। ভুলতে শিখো
৩। পুনরায় শিখো

আমেরিকান লেখক এল্ভিন টফলার বলেছেন – 
২১ এর দশকে তারা অশিক্ষিত নয় যারা লিখতে পারে না , পড়তে পারে না বরং তারাই অশিক্ষিত যারা জানে না কিভাবে শিখতে হয়, কিভাবে ভুলতে হয়, কিভাবে পুনরায় শিখতে হয়
প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে শিখব আমরা?

আপনি যখন খুব ছোটবেলায় আবৃত্তি করতেন – “নোটন নোটন পায়রাগুলি ঝোটন বেঁধেছে, দুই ধারে দুই রুই কাতলা নাইতে নেমেছে”, কত সুন্দর করে আবৃত্তি করার চেষ্টা করতেন। একটু মনে করে দেখুন এটি অবশ্যই পুথিগত বিদ্যা থেকে আপনি শিখেননি অবশ্যই। আপনি দেখে এবং শুনে শিখেছেন। আসলে প্রকৃতপক্ষে সেটিই ছিল শিক্ষাগ্রহনের ভালো উপায়। এটি একটি উদাহরন মাত্র। এখনো আমরা দেখে শিখি। আমি বলতে চাচ্ছি পুঁথিগত শিক্ষা আমাদের শুধুমাত্র জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে, এছাড়া আর কিছুই নয়। আপনাকে শিখতে হলে হাতে-কলমে কাজ করতেই হবে। আমি জানি কিভাবে সাঁতার কাটতে হয়, কিন্তু পানিতে না নামলে কি আমি সাঁতার শিখতে পারবো কখনো? ঠিক তেমনি আপনি যদি লেখক হতে চান, বইপুস্তক থেকে জ্ঞান অর্জন করে আপনাকে সমুদ্রের পারে বসতেই হবে, তা না হলে আপনার কলম থেকে সহজে লিখা বের হবে না।
চিন্তা, মানুষের সর্বোত্তম শক্তি। আপনে শিখতে হলে চিন্তা করতে হবে। চিন্তা করার জায়গা বের করে নিতে হবে। প্রকৃত সৃজনশীল মেধা বই-পুস্তকে আবদ্ধ থাকে না, ব্যবহারিক জীবনে কাজে লাগাতে হয়। কিভাবে শিখতে তার কিছু কৌশল বলে দিচ্ছি-

চিন্তা বাস্তবায়ন করুন

আপনি কোনো কিছু করার চিন্তা করছেন সেটি আপনাকে অনেকদূর পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে কেবল যদি সেটি আপনি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেন। আপনি পিছিয়ে পড়তে পারেন, তবুও আপনি কাজ শুরু করে দেন। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আপনি আটকে গিয়ে অনেক কিছু শিখে বাঁধা অতিক্রম করার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, ভোর বেলায় ঘুম থেকে ওঠা সহজ হয়ে যায় যদি প্রথম ৫ মিনিট কষ্ট করে উঠে বসে থাকতে পারেন।

কমিউনিকেশন বাড়ান

বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীদের সময় দিন। তাদের সাথে আলোচনায় বসুন। যতটা সম্ভব যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করুন। তাহলে প্রতিজনের কাছথেকে অনেক কাজের সংবাদ পেতে পারেন যার সূত্র ধরে নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন সম্ভব। বর্তমান সময়ে নেটওয়ার্কিং খুবই প্রয়োজনীয় হাতিয়ার। যার যোগাযোগ যতবেশি তারাই একজন অন্যকে ছাপিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

সঙ্গবদ্ধভাবে পড়াশুনা করুন

মনে রাখবেন বাসায় বসে একা একা পড়াশুনা করার চেয়ে কয়েকজন বন্ধুমিলে আলোচনার মধ্য দিয়ে পরার মধ্যে অনেককিছু শেখা যায়। আপনি যখন একা পড়ছে তখন একটি মস্তিষ্ক সেটি নিয়ে চিন্তা করছে। কিন্তু কয়েকজন মিলে পড়লে কয়েকজনের ভাবনা একত্রে মেলাতে পারবেন। শিখতে তুলনামূলক সময় কম লাগবে।

প্রচন্ড অনুশীলন করুন

একটি উদাহরন দেয়া যাক, ধরুন আপনি একটি প্রোগ্রামিং ভাষা শিখবেন। বাজার থেকে বই কিনে পড়া শুরু করলেন কিন্তু কম্পিউটারে সময় দেবার মতন ধৈর্য্য আপনার নেই। তাহলে আপনি কখনই শিখতে পারবেন না। তাই প্রাক্টিক্যাল অনুশীলনের বিকল্প কিছু নেই। প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে শিখা উচিত। আপনাকে ইংরেজি শিখতে হলে, ইংরেজি বলতেই হবে।

গুগল করা শিখুন

প্রতিটি বিষয় যাচাই করা শিখুন। সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই কোনো কিছু শিখার উপকরন পাওয়া যায়। আপনি নতুন কিছু শিখতে গেলে, অনলাইনে সেটির সম্পর্কে জেনে নিন। তাহলে আপনার কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা আরো বেশি ফলপ্রসু হয়ে উঠবে। বাংলায় কোনোকিছু সহজভাবে খুঁজেপেতে বাংলা সার্চইঞ্জিন “পিপীলিকা” ব্যবহার করুন।

নিজেকে সময় দিন

আপনাকে প্রকৃতপক্ষে কোনোকিছু অর্জন করতে গেলে নিজেকে আলাদাভাবে সময় দিতে হবে। চাকুরি কিংবা পড়াশুনার পাশাপাশি নতুন কোনো দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে  আপনাকে আলাদা করে সময় বের করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি রুটিন করে কাজ ভাগ করে নিতে পারেন। মনে রাখবেন শেখার কোনো সমাপ্তি নেই এবং শেখার কোনো প্রকারভেদও নেই। শুধুমাত্র আপনাকে সঠিক পথটি বাছাই করতে হবে। প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন অনেককিছু শেখার রয়েছে। অনেকেই নতুন কিছু শেখার আগ্রহ দেখাই না। বেশিরভাগক্ষেত্রেই ঠেকে শিখি। এর প্রধান কারণ হয়ত শেখার পথটি মসৃণ নয়। তাই আমাদের উচিত সঠিক এবং সহজভাবে শিক্ষাকে উপভোগ করা।

পড়ুন- গবেষনায় তারুণ্য


No comments

Theme images by Aguru. Powered by Blogger.