Ads

নিতু কিছু বলতে চায় না




নিতুর শিউলি ফুল পছন্দ

মানবজাতি খুবই অদ্ভুত এবং প্রতিটি মানুষ খুবই আলাদা। প্রত্যেক মানুষের মাঝে এমন কিছু বিশেষত্ব থাকে যা সেই মানুষটিকে খুব সুন্দরকরে আলাদাভাবে প্রকাশ করে। সেই বিশেষত্বের পরিমাণ অবশ্য খুবই সামান্য। তবে ততটুকুই তাকে অনন্যভাবে উপস্থাপন করতে যথেষ্ঠ। খুব আশর্যজনক হলেও সত্য  অপর একটি মানুষ সেই বিশেষত গুণটিকে ঠিকই চিহ্নিত করতে পারে এবং ওই মানুষটিকে বিশ্লেষন করতে শুরু করে। খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সহজ করে দিচ্ছি।
আমি বেশ কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে নিতু নামের একটি মেয়ের সাথে ফেইসবুকে চ্যাটিং করছি। আশ্চর্য হলেও ভয়ংকরভাবে সত্য হচ্ছে মেয়েটির ব্যক্তিত্ব আমাকে অসম্ভবভাবে মুগ্ধ করছে। এমন মুগ্ধ করা ব্যক্তিত্ব নিয়ে অনেকেই হয়ত রয়েছে । যেহেতু আমি সব মানুষকে জানতে পারিনি সেহেতু আমি নিতুকেও তাদের কাতারে ফেলছি না। এখন পর্যন্ত আমি একবার নিতুর ছবি দেখেছিলাম। এরপর আর দেখিনি, কখনো দেখবও না আশা করি। ভার্চুয়াল জগতে কথা বলতে একটা ভয় কাজ করে। কথা ফুরিয়ে যাবার ভয়। স্বাভাবিকভাবে সেই ভয়টা আমারো কাজ করে। তাই তো থেমে থেমে কথা বলা।

দুজন মানুষ কখনো এক নাগারে কথা বলতে পারে না। তাদের মধ্যে নিরবতা আসে, সংস্পর্শের কল্পনা আসে, ভালোবাসা তৈরি হয়। হুমায়ুন সাহেব বলেছিলেন একটি মেয়ে আর একটি ছেলে কখনো বন্ধু হতে পারে না। আমিও তার সাথে একমত। কখনো বন্ধু হতে পারে না। তবে তাহলে কি হয়? তিনিও বলে যান নি, আমিও জানি না। কিন্তু এতটুকু জানি-  অভিমান তৈরি হয়, ঘৃণা তৈরি হয়, ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। আমার আর নিতুর মধ্যে কখনো ঘৃণা তৈরি হবে না। তবে ভালোবাসাও তৈরি হওয়া উচিত না। আমি ভালোবাসা কখনো প্রকাশ করতে চাই না। আসলে ভালোবাসা প্রকাশ করার মতন জিনিস না, অনুভুব করার বিষয়। আমি বিষয়বস্তু থেকে হারিয়ে যাচ্ছি। যেটি বলছিলাম-
নিতু সাহেবের সাথে আমার কখনো ফোনে কথা হয়নি। হবেও না আশা করি। আমি খুব সখ করে চাইবো না নিতুর কন্ঠ ভেসে আসুক আমার মুঠোফোনে। মানুষ অপেক্ষা করতে পছন্দ করে। মা তার ছেলের জন্য ভাত নিয়ে অপেক্ষা করতে পছন্দ করে, গ্রামের বধু অপেক্ষা করতে পছন্দ করে তার স্বামীর জন্য। অপেক্ষার মধ্যে ভয়ঙ্কর একটি শক্তি রয়েছে। অপেক্ষা করলে আপনি কল্পনা করার শক্তি পাবেন। আপনি কোনো জিনিস পেয়ে গেলে আর কখনোই সেটির অপেক্ষা অনুভব করতে পারবেন না। আপনার জীবন থেকে সত্যিই কিছু স্বর্গীয় ক্ষমতা হারাতে থাকবেন। তাই আমি অপেক্ষা করতে পছন্দ করি। তবে আমি চাই না কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করুক। আমি ভালোবাসতে পারি, কিন্তু আমি চাই না কেউ আমাকে স্বার্থহীনভাবে ভালোবাসুক। করণ আমি তার মর্যাদা কখনোই দিতে পারব না।

নিতুর কথা বলছিলাম। নিতুকে নিয়ে আমি কখনো ভাবি নি, কল্পনা করি নি, তবে লিখতে পারছি। এর কারন হচ্ছে মুগ্ধতা। ভালোবাসা আর মুগ্ধতা কাছাকাছি হলেও কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। তবে আমাকে প্রশ্ন করলে আমি অবশ্য মুগ্ধতাকেই এগিয়ে রাখব। এখানে অপেক্ষা থাকে, কল্পনা করার অসীম সুযোগ থাকে, মরে যাবার ভয় থাকে না। কোন রকম প্রশ্নের সম্মুখীন ছাড়াই পাতার পর পাতা গল্প লিখতে পারা যায়। সেই মুগ্ধতাই তো বেশ। হুট করে মরে গেলে কথা রাখার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে কে? তবুও মানুষ অজ্ঞাত কারণে ভালোবাসতে চায় এবং ভালোবাসা পেতেও চায়। আমিও তার ব্যতিক্রম না। আমিও খুব সুন্দর একটি ভালোবাসা পেতে চাই। যেখানে ভালোবাসা প্রকাশ করা লাগবে না, চোখ দেখেই বুঝা যাবে। আমি ছোট বেলা থেকেই এমন একজনকে কল্পনা করতাম, যাকে নিয়ে আমি লিখবো। কল্পনার জগত উন্মুক্ত। যা খুশি লিখা যায়। মুগ্ধকরা কন্যা কে খুব সহজেই বলা যায় “প্রিয়তমা আমি তোমার সাথে সাগরে জ্যোৎস্না দেখতে চাই”। আবার খুব সহজেই তাকে হাজারো প্রশ্নের সম্মুখে রেখে হারিয়ে যাওয়া যায়। আমারো একটি কল্পনার জগত রয়েছে। সেখানে আমার ছোট্ট পৃথিবী। সাজিয়েছি নিজের মতন করে গল্প। সেখানে আমার ভালোবাসার মানুষ অপেক্ষা করছে আমার জন্য। আমিও খুব প্রাণ ভরে তাকে কাছে পেতে চাই। তবে সমস্যাটি হচ্ছে, অনেকক্ষেত্রেই আমার কল্পনা খুব কাকতালীয়ভাবে বাস্তবে মিলে যেতে শুরু করে। যেটি ভয়ঙ্কর, খুবই ভয়ঙ্কর।

নিতু সাহেব, আপনার ব্যাক্তিত্ব আমাকে মুগ্ধ করেছে। অনেক পথযাত্রীকেই মুগ্ধ করবে ভবিষ্যৎ এ । অনেকেই লিখবে আপনাকে নিয়ে। কিন্তু প্রথম আমি আপনাকে নিয়ে লিখেছিলাম। সময় বড় অদ্ভুত জিনিস। সময় পাল্টে দেয় পরিস্থতি, সমাজ এবং মানুষকে। মহান আল্লাহ মানুষকে অনেক ক্ষমতা দিয়েছেন কিন্তু সময় নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয় নি। দিলে হয়ত কোন মানুষই অসুখী হত না। সে যাই হোক, পরিবর্তের পাঠশালায় সবাইকেই বদলাতে শিখতে হয়। বদলাতে হয় নতুবা বদলে যেতে হয়। আমি কিন্তু বদলে দিতে চাই। সময়ের স্রোতে আপনিও একসময় খুঁজে পাবেন আপনার ভালোবাসার মানুষকে আর আমিও ফিরে যাবো আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে। এইত আর কটা দিন। এই ক দিন না হয় মুখ বুজেই সহ্য করুন?

ভোর ৪ টা ৪২ মিনিট। আজান দিচ্ছে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ, সেইসাথে ভোরের স্তব্ধতা। একই সাথে বিষন্ন বাতাস। আব্বুকে খুব মনে পড়ে এই সময় টায়। একটি আফসোস হয়ত সারাজীবন করে যাবো, “আব্বু থাকলে হয়ত আমার জীবনটা অন্যরকম হতো”।

No comments

Theme images by Aguru. Powered by Blogger.